ব্যারিস্টার আরমানকে আটকে রাখা হয়েছিল জানালাবিহীন একটি ঘরে।
হাসিনা সরকারের পতনের পরপরই সামনে আসে আয়নাঘর বা গোপন কারাগার। যেখানে গুম করে বছরের পর বছর রাখা হতো বন্দিদের। সেখান থেকে বেশ কয়েকজন এরই মধ্যে মুক্তিও পেয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন জামায়াতের সাবেক নেতা মীর কাশেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আরমান।
আয়নাঘরে তিনি প্রায় ৮ বছর বন্দি ছিলেন।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্যারিস্টার আরমান বলেছেন, ‘আট বছর পর প্রথমবারের মতো গোপন কারাগার থেকে বের করা হয় চোখ বেঁধে ও হ্যান্ডকাফ পরানো অবস্থায়। এরপর শ্বাস নিলেন ও গুলি লোডের শব্দ শুনতে পেলেন। পরে ঢাকার উপকণ্ঠে একটি কর্দমাক্ত জায়গায় জীবিত অবস্থায় ফেলে রেখে যাওয়া হয়।
ব্যারিস্টার আরমানকে আটকে রাখা হয়েছিল জানালাবিহীন একটি ঘরে।
যখন মিউজিক বন্ধ থাকতো তখন তিনি অন্য বন্দিদের নির্যাতনের শব্দ শুনতে পেতেন। আরমান বলেন, ‘ধীরে ধীরে আমি বুঝতে থাকি এখানে আমি একা নই। আমি অন্যদের কান্নার শব্দ শুনতে পেতাম। আমি নির্যাতনের শব্দ শুনতে পেতাম। লোকজনের চিৎকারের শব্দ শুনতে পেতাম। ’
একদিন রাতে সাদা পোশাকের কিছু লোক আমার বাড়িতে প্রবেশ করেন। পরিবারের কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এরপর সিঁড়ি দিয়ে টানতে টানতে নিয়ে গাড়ির মধ্যে তোলা হয়। আরমান বলেন, ‘আমি কোনোদিন ভাবতেও পারিনি আমার বাবার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কয়েকদিন আগে আমাকে গুম করা হতে পারে। আমি তাদের বলতে থাকি, আপনারা জানেন আমি কে? আমাকে আমার মামলা চালিয়ে যেতে হবে। পরিবারের পাশে থাকতে হবে।
গুম করার চার সপ্তাহ পরে তার বাবা মীর কাশেম আলীকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। এরপর বন্দি থাকা অবস্থায় তিন বছর পর এক রক্ষী মুখ ফসকে ফাঁসির কথা বলে দেন তাকে। তিনি বলেন, ‘আমার এই মুক্তি সম্ভব হয়েছে কিছু তরুণের কারণে। যখন আমি দেখি শিশু-বাচ্চারা নেতৃত্ব দিচ্ছে তখন আমি আশাবাদী হই। এটা নতুন বাংলাদেশ তৈরি একটি সুযোগ। ’
ব্যারিস্টার আরমানের এএফপির কে দেয়া সাক্ষাৎকার..।